বমিভাব এবং বমি – দুটি অস্বস্তিকর শারীরিক অবস্থা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করতে পারে। বিভিন্ন কারণে বমিভাব এবং বমি হতে পারে, যেমন খাদ্যে বিষক্রিয়া, গ্যাস্ট্রিক, মাইগ্রেন, কিংবা কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ওমিডোম (Omidom) হলো এমন একটি ঔষধ যা এই অস্বস্তিকর লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
ওমিডোম কি?
ওমিডোম হলো ডোমপেরিডোন (Domperidone) নামক একটি সক্রিয় উপাদান ধারণকারী ঔষধ। এটি ডোপামাইন প্রতিপক্ষ (Dopamine antagonist) নামক ঔষধ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। ডোপামাইন আমাদের মস্তিষ্কে উৎপন্ন একটি রাসায়নিক পদার্থ যা বমিভাব এবং বমি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওমিডোম আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের কার্যকারিতা ব্লক করে বমিভাব এবং বমি প্রতিরোধ করে।
ওমিডোম কিভাবে কাজ করে?
ওমিডোম দুটি প্রধান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে:
-
পাকস্থলীর গতি বৃদ্ধি: ওমিডোম আমাদের পাকস্থলীর পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং পাকস্থলী থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে খাদ্য পরিবহনের গতি বৃদ্ধি করে। ফলে পাকস্থলীতে খাদ্য দীর্ঘক্ষণ ধরে না থেকে বমিভাব এবং বমির ঝুঁকি কমে যায়।
-
মস্তিষ্কে বমির কেন্দ্রকে দমন: মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ, যাকে "বমির কেন্দ্র" বলা হয়, বমি নিয়ন্ত্রণ করে। ওমিডোম এই কেন্দ্রকে দমন করে বমিভাব এবং বমির অনুভূতি হ্রাস করে।
ওমিডোম ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ:
ওমিডোম নিম্নলিখিত কারণে সৃষ্ট বমিভাব এবং বমি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়:
-
কেমোথেরাপি-জনিত বমিভাব এবং বমি: ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপির একটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো বমিভাব এবং বমি। ওমিডোম এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
-
পাকস্থলীর রোগ: গ্যাস্ট্রাইটিস, গ্যাস্ট্রোপ্যারেসিস (পাকস্থলী খালি হওয়ার ধীর গতি), এবং পেপটিক আলসারের মতো পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগের লক্ষণগুলির চিকিৎসার জন্য ওমিডোম ব্যবহার করা হয়।
-
মাইগ্রেন: মাইগ্রেনের কারণে সৃষ্ট বমিভাব এবং বমির লক্ষণগুলি হ্রাস করতে ওমিডোম ব্যবহার করা হয়।
-
পার্কিনসন রোগ: পার্কিনসন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বমিভাব এবং বমি হতে পারে। ওমিডোম এই লক্ষণগুলি হ্রাস করতে সাহায্য করে।
ওমিডোম গ্রহণের নিয়ম:
ওমিডোম ট্যাবলেট এবং সাসপেনশন (তরল) আকারে পাওয়া যায়। সাধারণত, খাবারের 15-30 মিনিট আগে এই ঔষধ গ্রহণ করতে হয়। ঔষধের মাত্রা রোগীর বয়স, ওজন, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং চিকিৎসার কারণের উপর নির্ভর করে। ঔষধটি ঠিকমত কিভাবে গ্রহণ করবেন সে সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের নির্দেশাবলী মেনে চল গুরুত্বপূর্ণ।
ওমিডোম গ্রহণে সতর্কতা:
-
ঔষধের প্রতি অ্যালার্জি: আপনার যদি ডোমপেরিডোন বা ঔষধের অন্য কোনও উপাদানের প্রতি অ্যালার্জি থাকে তবে ওমিডোম গ্রহণ করা উচিত নয়।
-
পাকস্থলী বা অন্ত্রের সমস্যা: আপনার যদি পাকস্থলী বা অন্ত্রের রক্তক্ষরণ, বাধা,
ওমিডোমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে ওমিডোম গ্রহণের পর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
দেখা যায় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি
দেখা দিতে পারে:
- মাথাব্যথা
- মুখ শুষ্কতা
- পেট ব্যথা
- ডায়রিয়া
- ক্লান্তি
- অস্থিরতা
- স্নায়ুবিক সমস্যা
এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত মৃদু এবং কয়েকদিনের মধ্যে
kenhe যায়। তবে, আপনার যদি
কোনও
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
গুরুতর
হয়
অথবা
কয়েকদিনের
বেশি
স্থায়ী
হয়,
তাহলে
অবশ্যই
আপনার
ডাক্তারের
পরামর্শ
গ্রহণ
করুন।
ওমিডোমের সাথে অন্য ঔষধের মিথস্ক্রিয়া:
ওমিডোম অন্য কিছু ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে পারে।
তাই, আপনি যদি অন্য কোনও ঔষধ গ্রহণ
করে
থাকেন,
তাহলে
ওমিডোম
গ্রহণের
আগে
আপনার
ডাক্তারকে
জানান।
গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালে ওমিডোম:
গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালে ওমিডোম গ্রহণের আগে
আপনার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
ওমিডোম সংরক্ষণ:
ওমিডোম ঠান্ডা এবং শুষ্ক স্থানে রাখুন।
ঔষধটি
আলো
এবং তাপ থেকে
দূরে রাখুন।